কক্সবাজার, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

ভালোবেসে বিয়ে, যৌতুকের জন্য খাওয়ালো বিষ

ভালোবেসে করেছিল বিয়ে। তবুও যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় স্ত্রীকে বিষপানে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী।

মামলার বাদী বলেন, ভালোবেসে খুব স্বপ্ন নিয়ে মনের মানুষকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু বিনিময়ে সে যৌতুকের জন্য আমার ওপর নির্যাতন করেছে এবং আমাকে বিষ দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

মামলা সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের কলাউড়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের (২৬) সঙ্গে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। তারা পরস্পরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতেই যৌতুকের জন্য সংসারে শুরু হয় টানাপোড়েন। স্ত্রীর ওপর চলে স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন আগে ফার্নিচার দিতে স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন স্বামী নুর মোহাম্মদ ও তার মা হালিমা আক্তার। এদিকে মেয়ের বাবা নির্যাতনের চাপ কমাতে বসতভিটার কিছু অংশ বিক্রি করে জামাতাকে ফার্নিচার কিনে দেন। কিন্তু তাতেও নির্যাতন কমেনি।

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, ১৫ আগস্ট নুর মোহাম্মদ সৌদি আরব যাবেন বলে নগদ দুই লাখ টাকা নিয়ে আসতে স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি পাঠান। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে টাকা দিতে পারেননি তার বাবা। ফলে স্ত্রী টাকা না নিয়ে স্বামীর বাড়ি আসলে তাকে একটি ঘরে বন্দি করে দুদিন অনাহারে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। এতে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। জ্ঞান ফিরে পানি চাইলে তার স্বামী এবং স্বজনরা পানির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাকে পান করান। এসময় প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।

সবশেষ ২১ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি দোয়ারাবাজার থানায় তদন্তের জন্য পাঠান।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুপ্রাংশু দে দিলু বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: